সিবিএল২৪ :
আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর দেশের ঐতিহ্যবাহী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল। এ্ই কাউন্সিলের মাধ্যমে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দলটির নেতৃত্বে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাউন্সিল যতই এগিয়ে আসছে ততই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পদ। কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন মুখ আসছেন এমন গুঞ্জন জোরালো হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যখন সারাদেশে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দলের সুবিধাবাদী ও বিভক্তি সৃষ্টিকারীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে তখনই সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান টলটলায়মান হয়ে পড়েছে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে ওবায়দুল কাদের শুধু নিজের পক্ষের লোকজনকেই পৃষ্টপোষকতা এবং গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আভিযোগ করেছেন যে, ওবায়দুল কাদের তার গন্ডির বাইরের লোকজনকে জায়গা দিতে চাইছেন না। এছাড়া ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশে সহযোগিতাসহ আরও কিছু অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর গোচরীভূত হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ওবায়দুল কাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন সাধারণ সম্পাদক করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের সভাপতি এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। নতুন সাধারণ সম্পাদকের একটি সংক্ষিপ্ত তা্লিকাও তৈরি করে ফেলেছেন শেখ হাসিনা। এবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে একটা বড় চমক আসতে পারে, বিশেষ করে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের কথা বিবেচনা করে আওয়ামী লীগের সাধা্রণ সম্পাদক পদে তরুণ কাউকে বিবেচনা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, ‘নতুন সাধারণ সম্পাদক কে হবেন তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা ইতোমধ্যে প্রস্তুত করে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদেরকে তিনি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের চূলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। শেষ পর্যন্ত দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক কে হবেন সেটা চূড়ান্ত হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। তবে শেখ হাসিনার সংক্ষিপ্ত তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন__
১) খালিদ মাহমুদ চৌধুরী
আলোচনায় সবার আগের রয়েছেন বর্তমান নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। সৎ এবং ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গনে তার সুনাম রয়েছে। মন্ত্রীত্ব পেয়ে কয়েক মাসের মধ্যে তিনি নৌ-পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আর এসব কারণে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সংক্ষিপ্ত তালিকায় উঠে এসেছেন বলে জানা গেছে।
২) ড. আব্দুর রাজ্জাক
ড. আব্দুর রাজ্জাক বর্তমান কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সাধারণ সম্পাদক পদে কিছুদিন আগেও তিনি সবার চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রীত্ব অথবা দলের সাধারণ সম্পাদক পদ যে কোন একটি গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হলে তিনি কোনটি নেবেন সেটা নিয়ে তার মধ্যের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে বলে আওয়ামী রীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এবং সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে বিবেচিত নাআও হতে পারেন।
৩) ডা. দীপু মনি
বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনির নামও রয়েছে পরবর্তী সাধারন সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত তালিকায়। শেখ হাসিনার গুড বুকে নাম রয়েছে তার। দীপু মনির বিরুদ্ধেও কোন অনিয়ম, দুর্নীতি এবং দলে বিভক্তি সৃষ্টির অভিযোগ নেই। একেবারে ক্লিন ইমেজের নেতা তিনি। আর এই বিবেচনা থেকেই পর্বর্তী সাধারণ সম্পাদক পদে তিনি বিবেচনায় রয়েছেন।
এছাড়া চমক হিসেবে আরও দুইএকজন তরুণ নেতার নামও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্খান পেয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে ডিসেম্বরের শুরুতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নতুন সাধারণ সম্পাদকের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন, তবে সব বিবেচনায় যোগ্য কাউকে যদি না পান তবে ওবায়দুল কাদেরকে আরও এক মেয়াদে রেখে দিতে পারেন বলেও জানা গেছে।
সূত্র: বিডিটাইমস৩৬৫ডটকম