সোনাগাজী, ফেনী : ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় চাচা শ্বশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করা সেই প্রবাসীর স্ত্রীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এই আদেশ দেন।
ওই প্রবাসীর স্ত্রী আদালতকে জানিয়েছেন, তিনি তার চাচা শ্বশুরের হাতে ধর্ষণের শিকার হননি। অন্য অজ্ঞাত যুবকের হাতে তিনি ধর্ষিত হয়েছেন। কিন্তু চাচা শ্বশুরের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরেই এই মিথ্যা মামলা করা হয়।
এদিকে চাচা শ্বশুরের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের কারণে ওই নারীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে সেই চাচা শ্বশুরকে আগের মামলা থেকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
ভুক্তভোগী ওই চাচা শ্বশুরের আইনজীবী ফয়েজুল হক মিল্কি জানান, বেশ কিছুদিন আগে প্রবাসীর স্ত্রীকে একা রেখে তার শাশুড়ি লাকি আক্তার আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। সে রাতে ওই নারী তার সন্তানকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। এই সুযোগে রাত ১২টার দিকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তার ঘরে ঢুকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন।
ফয়েজুল হক মিল্কি জানান, বিষয়টি ওই নারী তার শাশুড়িকে জানালে তিনি বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে চুপ থাকতে বলেন। এক পর্যায়ে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি তার শাশুড়িকে জানান। এ সময় শাশুড়ি অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে ভুল বুঝিয়ে চাচা শ্বশুর সফি উল্যাহর বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। তার শাশুড়ির সঙ্গে চাচা শ্বশুরের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরেই এই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।
এ আইনজীবী আরও জানান, ওই নারী তার চাচা শ্বশুরকে এই মিথ্যা মামলা থেকে জামিনের জন্য তার অনাপত্তি জানিয়ে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। তার এই আবেদনের পরিপ্রক্ষিতে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামি সফি উল্যাহকে জামিনের আদেশ দেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মিথ্যা মামলা দায়েরের অপরাধে ১৭ ধারা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে ওই গৃহবধূর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও আইনজীবী ফয়েজুল হক জানান।
প্রসঙ্গত, গত ২২ নভেম্বর সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের সফি উল্যাহর (৭৫) বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই গৃহবধূ সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।